আমপাড়া নৈদারখামার বক্স কালভার্ট নির্মাণের দুই মাসেই ভেঙে গেল
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, 3:05 AM

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, 3:05 AM

আমপাড়া নৈদারখামার বক্স কালভার্ট নির্মাণের দুই মাসেই ভেঙে গেল
আমপাড়া-নৈদারখামার বক্স কালভার্ট নির্মাণের দুই মাসেই ভেঙে গেল কালভার্টের সংযোগ সড়ক। সদর উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের আমপারা-কাইয়ারগাঁও-নৈদারখামার সড়কের উপর নবনির্মিত কালভার্টের সংযোগ সড়ক ভেঙে গেছে। কালভার্ট নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক নতুনভাবে কালভার্ট মেরামত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, এলাকার মানুষ ও যানবাহন চলাচলের অতি গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক। সড়কে কালভার্ট না থাকায় মানুষ ও যান চলাচল করতে পারেনি দীর্ঘদিন। গত দুই মাস আগে কাইয়ারগাঁও-নৈদারখামার সড়কে নির্মাণ করা হয় একটি কালভার্ট। এই কালভার্ট নির্মাণে রড, সিমেন্ট, বালু, পাথর পর্যাপ্ত দেয়া হয়নি। দায়িত্বশীলরা তাদের খুশিমতো নির্মাণ করেছেন। এলাকাবাসী কেউ এই অনিয়মের প্রতিবাদ করতে পারেনি। এই কালভার্ট পুনরায় মেরামত সহ দোষীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি স্থানীয়দের।
এলজিএসপি-৩ বিবিজি তহবিলের ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে কালভার্ট নির্মাণ করে দেয় মেসার্স ইভা বিল্ডার্স। বাস্তবায়নে ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আব্দুল লতিফ। নির্মাণ কাজের সার্বক্ষণিক দেখভাল করেন কার্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. তালেব মিয়া। সহযোগিতায় ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান মো. মুকশেদ আলী। এ সময় নি¤œমানের কাজ হয় নবনির্মিত কালভার্ট ও সংযোগ সড়কের। কালভার্টে পরিমাণ মতো রড ব্যবহার হয়নি, পুরাতন রড ব্যবহার করা হয়েছে। কালভার্ট ঘেঁষে নির্মাণ হওয়া পাকা সংযোগ সড়কেও নিয়ম অনুযায়ী রড, বালু, পাথর, সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়নি। এই কারণে কালভার্টের সংযোগ সড়ক ভেঙে গেছে। কালভার্টের উভয় পাশের সংযোগ সড়কে নামেমাত্র কাজ হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সৈয়দুর মিয়া বলেন, আমাদের জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নে যত প্রকারের উন্নয়ন কাজ হয়, সব কাজেই দুর্নীতি আছে। কথা বললেই সরকারী কাজে বাধা দেয়ার মামলা। আমরা ভয়ে কোনো কিছু না বলায় অনিয়ম করা নিরাপদ হয়েছে। যে যেমন পারেন, দুর্নীতি করে চলেছেন। এসবের প্রতিকার জরুরি প্রয়োজন।
স্থানীয় বাসিন্দা ইলিয়াছ মিয়া বলেন, আমপারা-কাইয়ারগাঁও-নৈদারখামার সড়কের উপর দিয়ে ইউনিয়নের হাজারো মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে থাকে। কাজে অনেকটা অনিয়ম হয়েছে। তদন্তপূর্বক পুনরায় কালভার্টের মেরামত কাজ করার দাবি আমাদের।
আব্দুল জব্বার বলেন, মাত্র কয়েকদিন আগে কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এখনই ভেঙে গেছে। কাজে অনিয়ম না হলে সোয়া পাঁচ লাখ টাকার কাজের কালভার্ট ভেঙে যায় কিভাবে। এদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার।
জসীম উদ্দিন বলেন, আমাদের জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের প্রায় সকল উন্নয়ন কাজেই অনিয়ম হয়। এই কালভার্ট নির্মাণেও হয়েছে ব্যাপক অনিয়ম। কালভার্ট মেরামত জরুরি প্রয়োজন।
এই বিষয়ে ইউপি সদস্য মো. আব্দুল লতিফ বলেন, আমি কিছুই জানি না। সব জানেন কার্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. তালেব মিয়া।
কার্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. তালেব মিয়া বলেন, আমি উপস্থিত থেকে কাজ করিয়েছি। ভেঙে যাবে কেন। কালভার্টের কাজ হয়েছে নিয়ম মতো। ভেঙে গেলে সংস্কার করে দেবো।
জাহাঙ্গীরনগর ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান মো. মুকশেদ আলী বলেন, আমপারা-কাইয়ারগাঁও-নৈদারখামার সড়কে কালভার্ট নির্মাণের সময় ইঞ্জিনিয়ার তালেব মিয়া দাঁড়িয়ে থেকে কাজ করিয়েছেন। আমি নিজেও ছিলাম। নির্বাচনের আগে কালভার্ট নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। এখন আবার ভেঙে গেলো কিভাবে তা জানি না।
সদর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, কালভার্টের সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি সরেজমিন দেখার জন্য কার্য ইঞ্জিনিয়ারকে পাঠিয়ে দেয়া হবে। পরে মেরামত কাজের ব্যবস্থা নেয়া হবে।