ঢাকা ২৮ জুন, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের আইন লঙ্ঘন করে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদে সালমা বানু! ভারতীয় পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা , ৭০ জন নিহতের দাবি ভারতের। পৈত্রিক সম্পত্তি বাঁচাতে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ডিএমপিতে মাহাদী হাসানের অভিযোগ সমাজসেবা অধিদপ্তর ও জাতীয় প্রতিবন্ধি উন্নয়ন ফাউন্ডেশন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পুনর্বাসন কেন্দ্র গাবতলী'র বস্তিতে আগুনে পুড়ে যাওয়া হতদরিদ্রদের মাঝে ইফতার মাহফিল ট্যাক্স ল'ইয়ার্স সোসাইটি ২০১৭ এর নির্বাচিত নতুন কমিটির অভিষেক দোয়া ও ইফতার অনুষ্ঠিত জুড়ীতে আমার দেশ পত্রিকার নাম ভাঙ্গিয়ে এক প্রতারকের চাঁদাবাজির অভিযোগ ‘বাবা নেই’ ভিডিও গানের মোড়ক উন্মোচন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা জালাল আহমেদ বহাল তবিয়তে

শ্রদ্ধাঞ্জলি" তানোরে প্রকৃতি ও সংস্কৃতি সুরক্ষার কারিগর

#

০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২,  12:40 PM

news image

 ২০১৩ সালে 'পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ' শ্রেণিতে ব্যক্তিগত পর্যায়ে 'জাতীয় পরিবেশ পদক' পেয়েছেন ইউসুফ মোল্লা। রাজশাহীর তানোরের পাঁচন্দর ইউনিয়নের দুবইল গ্রামের এই কীর্তিমান নিজ গ্রামে গড়ে তুলেছেন তিন শতাধিক দেশীয় ধানের 'বরেন্দ্র বীজ ব্যাংক' এবং গ্রামীণ প্রত্নতত্ত্ব সামগ্রীর এক দুর্লভ সংগ্রহশালা। শুধু নিজ এলাকাতেই নয়; দেশের নানা প্রান্তে পরিচিতি ও জনপ্রিয় হয়েছেন তিনি। হয়ে উঠেছেন সবার প্রিয় 'মোল্লা ভাই'। বাস্তবিক অর্থেই কৃষিপ্রধান বাংলার কৃষিজগৎ আজ দীর্ণ ও নড়বড়ে। একদিকে দেশের গ্রামীণ তরুণ কৃষি থেকে উদ্বাস্তু হচ্ছে; অন্যদিকে শহুরে কিছু তরুণ নতুন স্বপ্ন নিয়ে কৃষিকে আগলে নিজের পরিচয় দাঁড় করাচ্ছে। নিরাপদ, প্রাকৃতিক কৃষি ফসলের জোগান নিশ্চিতকরণে উদ্যোক্তা ও সংগঠক হওয়ার সাহস করছে। ইউসুফ মোল্লা এমন স্বপ্নময় তরুণদের দেশি শস্য-ফসল জোগান দিয়েছেন; মজবুত করেছেন নতুন প্রজন্মের তরুণদের কৃষিজাত স্বপ্ন-সাহসকে। ইউসুফ মোল্লার সঙ্গে আমার সম্পর্ক মাত্র ১২ বছরের। প্রথম সাক্ষাৎ ২০১০ সালে। বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিকের মাধ্যমে। তানোরের মেলায় ইউসুফ মোল্লা তার সংগ্রহ সামগ্রীর একটি স্টল দিয়েছিলেন। অহিদুর রহমান ইউসুফ মোল্লার তথ্য নথিভুক্ত করেছিলেন। ২০১২ সালের আগস্টে প্রথম তার বাড়িতে শিক্ষা গ্রহণের জন্য যাই। প্রতিবেলায় খাবারের থালা আমাকে চমকে দিত। মাগুরশাইল, মুগী, চেংগুর, দাদখানি, রাঁধুনিপাগল ধানের ভাতের সঙ্গে থাকত কলা বড়া, করলা পাতার বড়া, ডালের বড়ি, ডালকচু, মানকচু, লাউপাতা, সজনে, গিমা, লটপটে শাক, কলমি, ডুমুর ভাজি কিংবা পাতাকচু ভর্তা। বরেন্দ্রর কোন ধানের ভাতের সঙ্গে কোন পদের তরকারি মানানসই- এমন সরেজমিন গবেষণার দুর্লভ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি মোল্লা ভাইয়ের বাড়িতেই। শিখেছি বরেন্দ্র অঞ্চলের তাল ও আমের জনশ্রেণিবিন্যাস। জেনেছি প্রাচীন বরেন্দ্রগীতি, মাদারের গান থেকে শুরু করে আদি কৃষিবচন। ইউসুফ মোল্লা যখন আগের দিনের আদিবাসী-বাঙালির মধুর সম্পর্কের কথা বলতেন, তার চোখ থেকে স্বর্গীয় দ্যুতি ছড়িয়ে পড়ত। আবার শিব নদীর ধারে একদিন দাইরসা (দারুসা) দাঙ্গার কথা বলতে গিয়ে অঝোরে কেঁদেছেন; শেষ করতে পারেননি। ২০২২ সালের ১৪ জানুয়ারি সকালে নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন আমাদের প্রিয় 'মোল্লা ভাই'। যখন তার শেষযাত্রার সঙ্গী হই, দেখি পুরো দুবইল গ্রাম যেন নানা জাতি-ধর্ম-লিঙ্গ-বয়সের মানুষে আরেক সংগ্রহশালা। চলতি আলাপখানি ইউসুফ মোল্লার জীবন ও কর্ম এবং দর্শনের সংমিশ্রণে এক স্মৃতিকাতর অভিজ্ঞতার বিনম্র বয়ান।

logo প্রকাশক - মোঃ মাহফুজুর রহমান সম্পাদক- মোঃ সাজেদুর রহমান নির্বাহী সম্পাদক- আব্দুস সালাম মিতুল