চিনিকল চালু হতে না হতেই বন্ধ: আখ নিয়ে বিপাকে কৃষক
আক্তারুল ইসলাম আক্তার, ঠাকুরগাঁওঃ
২৮ ডিসেম্বর, ২০২১, 4:55 PM

আক্তারুল ইসলাম আক্তার, ঠাকুরগাঁওঃ
২৮ ডিসেম্বর, ২০২১, 4:55 PM

চিনিকল চালু হতে না হতেই বন্ধ: আখ নিয়ে বিপাকে কৃষক
ঠাকুরগাঁওয়ের একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান চিনিকলটি এ বছর আখ মারাই মৌসুমে চালু হতে না হতেই যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে । যদিও এ সমস্যা সমাধানে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। এমন পরিস্থিতিতে আখ নিয়ে বিপাকে পড়েছে সেতাবগঞ্জ, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ের আখচাষীরা।
সোমবার বিকালে সরজমিনে ঠাকুরগাঁও চিনিকল ঘুরে দেখা গেছে আখ মাড়াইয়ের জন্য নিয়ে আসা আখের গাড়ি লাইন ধরে দাড়িয়ে আছে। যান্ত্রিতক ত্রুটির কারনে আখ মারাইয়ের জন্য আখ নিচ্ছেনা চিনিকল কর্তৃপক্ষ। ফলে অনেক আখচাষী বসে বসে লোকসানের প্রহর গুনছে। অনেকে আবার ক্ষোভ প্রকাশ করে চিনিকল সংলগ্নমাঠে আগের গাড়ি থেকে আখ ফেলে দিয়ে বাসায় চলে যাচ্ছে।
জেলার রহিমানপুর এলাকার আখচাষী ফয়েজ উদ্দীন বলেন, আমি এবার ৮ একর জমিতে আখ চাষ করেছি। এ বছর আখ দেওয়ার অনুমতিও আছে আমার কাছে। চিনিকলে দুই গাড়ি আখ নিয়ে এসেছি মাড়াইয়ের জন্য। এসে দেখি আখ নিচ্ছেনা।
কর্তৃপক্ষ বলছে যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে আখ মাড়াই বন্ধ রয়েছে দুদিন ধরে। এই চাষীর অভিযোগ যান্ত্রিক ত্রুটি হতে পারে। যদি আগে থেকে মিল কর্তৃপক্ষ মাইকিং করতো তাহলে আমাদের আখ নিয়ে এত কান্নাকাটি করতে হতোনা। আমরা ক্ষেত থেকে আখ মারাই এর জন্য মিলে আনতাম না।
আরেক আখচাষী নুরুজ্জামান গোলাপ বলেন, আমি ২০ একর জমিতে আখ চাষ করেছি। এত পরিমাণ আখ চাষ করে আমি বিপাকে পড়েছি এখন। আখচাষীরা লোকসানের প্রহর গুনতে গুনতে একদিন কোন কৃষক আর আখ চাষ করবেনা।
ঠাকুরগাঁও চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাখাওয়াত হোসেন জানান, চলতি বছরের গত ২৪ ডিসেম্বর পঞ্চগড়, সেতাবগঞ্জ ও ঠাকুরগাঁওয়ের আখসহ ৫০ হাজার মে:টন আখ মাড়াইয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এ বছর মাড়াই মৌসুম উদ্বোধন হয়। তারপরদিন ভোর থেকে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়।
এরপর থেকে দু এক ঘন্টা করে চিনিকল চললেও বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকে। এখন যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে মিলটি আর চলছেনা। ফলে মিলে আখ মাড়াই কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ আছে। শিঘ্রই সমস্যা সমাধান করা হবে। সমস্যাটি কৃষকদের জানাতে আজ সকাল থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
এদিকে রাষ্ট্রয়াত্ব শিল্প রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের জেলা আহ্বায়ক মাহাবুব আলম রুবেল বলেন, ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আজ অবদি মিলটির তেমন যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন করা হয়নি। একদিকে মিল কর্তৃপক্ষ আখচাষীদের আখ চাষে উদ্বুদ্ধ করার কথা বললেও যন্ত্রপাতি আধুনিকায়নের দিকে তেমন কোন জোড়ালো ভূমিকা নেই। ফলে কৃষকরা এর কুফল ভোগ করছে। আখ মাড়াই করতে না পাড়ার কারনে আখ শুকিয়ে যাচ্ছে। লোকসানের মুখে আখচাষীরা। এমন চলতে থাকলে এই মিলটিও বন্ধ হবে।