পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের আইন লঙ্ঘন করে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদে সালমা বানু!
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৮ মে, ২০২৫, 2:12 PM

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৮ মে, ২০২৫, 2:12 PM

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের আইন লঙ্ঘন করে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদে সালমা বানু!
সালমা বানু ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসাবে যোগদান করেন। তার নিয়োগ পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক আইন, ২০১৪ এর ১৩(২) ধারা লঙ্ঘীত হয়েছে।
তিনি দীর্ঘ ৬(মাস) পর ২০২৫ সালের ২৩ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর কার্যত্তোর অনুমতি চেয়ে পত্র দেন । বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া ব্যবস্থাপনা পরিচালক এর দায়িত্ব পালন করায় বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২৫ সালের ৫ মে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে ৫(পাঁচ) কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যাসহ তার নিয়োগের সকল প্রামানিক দলিল ও জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপিসহ প্রদানের নির্দেশনা প্রদান করে। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হিসেবে লেজিলেসটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগেরও অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দীন দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০২৫ সালের ১৪ মে বাংলাদেশ ব্যাংকে ব্যাখ্যা প্রদান করেন। ব্যাখ্যায় তিনি উল্লেখ করেন যে, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ বিধিমালা সরকার কর্তৃক প্রণীত না হওয়ায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক আইন ২০১৪ ধারা ১৩(২) এর শতাংশ মোতাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের ক্ষমতা সরকারের।
অথচ পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক (ব্যবস্থাপনা) বিধিমালা-২০১৫ এর গেজেট ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর জারী করা হয়েছে। উক্ত বিধিমালার ৪ নং বিধিতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের বিধি বিধান উল্লেখ রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংককে অসৎ উদ্দেশ্যে ভুল তথ্য প্রদান করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায় সালমা বানু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনি রুপালী ব্যাংকে ১৯৯৮ সালে সিনিয়র অফিসার হিসাবে যোগদান করেন। ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় আওয়ামী লীগের সাথে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত থাকায় তিনি ৩ বছর পর পর ডিজিএম হতে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ পর্যন্ত ৪টি পদোন্নতি লাভ করেন। ব্যাংকের বর্তমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার কারণে ব্যাংকটির কার্যক্রম তলানীতে পৌঁছে গেছে। ব্যাংকটির কর্মচারীদের মাঝে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ নিয়ে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। ব্যাংকটির বর্তমানে মোট ঋণ 9202.08 কোটি টাকা, তম্মধ্যে ৫১% ওভারডিউ এবং ২৩.৭৮% % শ্রেণীকৃত। একটি বাড়ি একটি খামার বিলুপ্তির পর ২০২১ সালের ৩০ জুন ব্যাংকের নিকট ২৭% ঋণ ওভারডিউ হিসাবে স্থানান্তর করা হয়েছে। ওভারডিউ এবং শ্রেণীকৃত ঋণের হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে ব্যাংকের কার্যক্রম সীমিত হয়ে ব্যাংকটি রুগ্ন হয়ে পড়ছে। ঋণ গ্রহীতাদের ঋণের প্রচুর চাহিদা স্বত্তেও অসৎ উদ্দেশ্যে প্রায় ২৫০০ কোটি টাকা বিভিন্ন প্রাইভেট ও খারাপ ব্যাংকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এফডিআর করে রেখেছে, উক্ত এফডিআর এর মধ্যে উক্ত ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকটের কারনে বিপুল সংখ্যক এফডিআর ভাঙ্গানো যাচ্ছে না, যা ভবিষ্যতে পাওয়াও অনিশ্চিত। ব্যাংকের সকল কার্যক্রমে দূর্নীতি সম্পৃক্ত মর্মে অনুসন্ধানে জানা গেছে, ফলে ব্যাংক থেকে গ্রাহক তাদের সমিতির সদস্য পদ প্রত্যাহার করে চলে যাচ্ছে। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প ব্যাংকে ৫৭ লক্ষ গ্রাহক স্থানান্তর করেছে, বর্তমানে আছে, ৪৮.২৬ লক্ষ। দিন দিন উল্লেখযোগ্য গ্রাহক কমে যাচ্ছে। বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং মহাব্যবস্থাপকগণের অযোগ্যতার ফলে ব্যাংকটি রুগ্ন হতে চলেছে। ব্যাংকের ৫৭ লক্ষ হত দরিদ্র প্রান্তিক জনগণের দরিদ্রতা বিমোচনের লক্ষ্যে এবং ব্যাংকটি রক্ষার্থে জরুরী ভিত্তিতে ব্যাংকে একজন যোগ্য ব্যবস্থাপনা পরিচালক, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মহাব্যবস্থাপক পদায়ন প্রয়োজন মর্মে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্মকর্তা/কর্মচারীগন অবহিত করেছেন এবং এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।