হুমায়ুন আজাদ হত্যাকান্ড বিচারকাজ অসম্পূর্ণ
১৫ এপ্রিল, ২০২২, 4:47 AM

১৫ এপ্রিল, ২০২২, 4:47 AM

হুমায়ুন আজাদ হত্যাকান্ড বিচারকাজ অসম্পূর্ণ
দীর্ঘ দেড় যুগ আগে একুশে বইমেলার বাইরে বহুমাত্রিক লেখক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদকে হত্যার ঘটনায় চার জঙ্গির ফাঁসির রায় দিয়েছে আদালত। আর এই রায়ের মাধ্যমে হত্যাকা--অপরাধের সাথে সরাসরি জড়িতদের বিচারকাজ সম্পূর্ণ হলেও মূল ষড়যন্ত্রকারী এই বিচারকাজ থেকে খালাস পাওয়ায় হুমায়ুন আজাদ হত্যাকা- বিচারকাজের একদিকে যেমন গ্রহযোগ্যতা পায়নি, অন্যদিকে এই বিচারকাজ অসম্পূর্ণই থেকে গেল!খবর বাপসনিউজ।
¬
গত বুধবার (১৩ এপ্রিল, ২০২২) সংগঠনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নাঈমুর রহমান ইমনের স্বাপসনিঊজকে এমনটি জানান বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (বোয়াফ)।
বোয়াফ সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময় বলেন, দীর্ঘ দেড় যুগ পরেও হুমায়ুন আজাদ হত্যাকান্ডের বিচারকাজ জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। হত্যাকা-ে সরাসরি অংশগ্রহণ করা চার জঙ্গির ফাঁসির রায় হলেও মূল ষড়যন্ত্রকারী মানবতাবিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত কুখ্যাত রাজাকার দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি; এই বিচারকাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, অসম্পূর্ণ গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি হয়েছে।
তিঁনি আরও বলেন, ২০০৪ সালের ২৫ জানুয়ারি জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন সংসদ সদস্য কুখ্যাত রাজাকার দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’ উপন্যাসটিকে ইসলাম বিরোধী আখ্যায়িত করে যে বক্তব্য প্রদান করেন, তাতে হুমায়ুন আজাদ হত্যাকারীদের উদ্বুদ্ধ করেন! হত্যা সংঘটিত করতে উস্কে দেন! শুধু তাই নয়, সাঈদী বিভিন্ন সমাবেশেও টার্গেট করে বইটি নিয়ে বিষোদগার করেন। দেশের জনগণ-সহ অপরাধীদের বিভ্রান্ত করেন। এমনকি, এ মানবতাবিরোধী অপরাধী কুখ্যাত রাজাকার দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী হুমায়ুন আজাদের লেখা বন্ধ করতে ব্ল্যাসফেমি আইন প্রণয়নের জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ারও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন!
কবীর চৌধুরী তন্ময় বলেন, একজন অপরাধীর অপরাধের চেয়ে অপরাধী সৃষ্টি করেন এমন ব্যক্তির অপরাধ এতোটাই ভয়াবহ যার অপরাধ পুরো সমাজ, রাষ্ট্র ও মানব সম্প্রদায়কে ধ্বংস করতে সক্ষম! মহান মুক্তিযুদ্ধে বুদ্ধিজীবীদের হত্যার মাধ্যমে একটি জাতির মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিতে স্বাধীনতাবিরোধীরা যে ষড়যন্ত্র শুরু করেছিল, অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ হত্যাকান্ডের মাধ্যমে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশেও তা অব্যাহত রয়েছে।
সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়িয়ে যারা দেশের সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে, ধর্মান্ধ-উগ্রবাদগোষ্ঠীকে অপরাধ সংঘটিত করতে যারা উদ্বুদ্ধ করছে, তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে রাষ্ট্র যদি ব্যর্থ হয় তাহলে এই অপরাধরোধ করা যেমন কঠিন হয়ে পড়বে, তেমনিভাবে রাষ্ট্রের বিচারকাজও অসম্পূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হবে বলে মনে করেন সংগঠনের সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময়।