গাজীপুর শ্রীপুরের বাইসাইকেলে করে ঔষধ বিক্রিতা আসু জিরো থেকে হিরো গড়ে তুলেছে কোটি টাকার পাহাড়
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ মার্চ, ২০২২, 5:43 PM

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ মার্চ, ২০২২, 5:43 PM

গাজীপুর শ্রীপুরের বাইসাইকেলে করে ঔষধ বিক্রিতা আসু জিরো থেকে হিরো গড়ে তুলেছে কোটি টাকার পাহাড়
(পর্ব -১)
গাজীপুর শ্রীপুরে আসপাডা এলাকায় আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে চলছে ঔষধের রমরমা ব্যবসা,নেই কোন ঔষধ প্রশাসনের নজরদারি, প্রতারিত ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে সাধারণ মানুষ,আর কোটিপতি বনে গেছে আসু।কিশোরগঞ্জ জেলার আসু এবং তাপস তারা দুই জন মিটফোর্ড থেকে ঔষধ এনে বাইসাইকেল ও অটোরিকশা করে দোকানে দোকানে ঘুরে ঔষধ বিক্রি করতো গাজীপুর শ্রীপুর এলাকায় বলে জানাযায়। আর যে সমস্ত ঔষধ বিক্রি করতো যা বাংলাদেশ ড্রাগ এসোসিয়েশন নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করেছেন।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মানুষের সুস্বাস্থ্যের জন্য সরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক খুলে দিয়েছেন তিনি, দিচ্ছেন বিনামূল্যে ডক্টর নার্স দিয়ে সেবা এমনকি বিনামূল্যে দিচ্ছেন ঔষধ আর এই ভয়াবহ করুনা ভাইরাসের জন্য নিয়ে এসেছেন তিনি বিনামূল্যে ভ্যাকসিন, সরকার এত কিছু করার পরেও মানুষকে সেবা মান ভালো রাখতে এতকিছু করে যাচ্ছেন,অন্য দিকে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী চক্র মানুষকে নামে-বেনামে ওষুধ দিয়ে করছেন চরম ক্ষতি, তাই তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য এলাকার সচেতন নাগরিকরা সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
কিশোরগঞ্জ জেলার আসু বাইসাইকেল ও অটোরিকশা করে ঔষধ বিক্রিতা হঠাৎ করে আসু নাম থেকে আসাদ সাহেব বলে পরিচিত হয়ে উঠেন,(আসু) হকার থেকে বনে গেছে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আসাদ। আসাদ নামের এক ব্যাক্তি ওষুধের দোকানেতে চলছে ব্যাপক অনিয়ম ও অভিনব প্রতারণা। ব্যবসায়ীদের নেই কোন ব্যবসা পরিচালনার বৈধ তেমন কাগজপত্র,নেই ড্রাগ লাইসেন্স। বাইসাইকেল ও অটোরিকশা করে ঔষধ বিক্রিতা জিরো থেকে হিরো হয়েছেন,কি ভাবে এমন প্রশ্ন গুরপাক খাচ্ছে এলাকাবাসির মনে।অনুসন্ধানী টিম এমন এই প্রশ্নের উত্তর খুজতে গিয়ে বেরিয়ে আসে নানান চাঞ্চল্যক তথ্য।
অনুসন্ধানে জানাযায়, কিশোরগঞ্জ জেলার আসু তিনি ছিলেন,একজন প্রবাসী।তিনি প্রবাস থেকে তেমন টাকা পয়সা রোজকার করতে পারেননি বলে জানাযায়,পরে দেশে চলে আসেন।দেশে আসার পর পাঠনার তাপস ও আসু দুইজন মিলে মিটফোর্ড থেকে ঔষধ এনে বাইসাইকেল ও অটোরিকশা করে ঔষধ বিক্রি করতেন তারা,কিছু দিন পরে তুষার নামের পাঠনার কে আলাদা করে দিয়ে আসু তিনি নিজেই একা ঔষধের ব্যবসা চালিয়ে যান।ঔষধ বিক্রি করতে করতে কিছু অসাধু ঔষধ দোকানী দের কে নিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন তিনি।এভাবে কিছু দিন ব্যবসা করার পরে,তিনি শ্রীপুরের বিশিষ্ট ঔষধ ব্যবসায়ী বলে পরিচিত লাভ করেন এবং আসু নাম থেকে আসাদ সাহেব হয়ে যান তিনি।এবং অস্বাস্থ্যকর ঔষধ বিক্রি করেই শুরু হয় ভাগ্য বদলানোর পালা, এর পর থেকেই আসুর ভাগ্য খুলে যায়।তখন থেকেই এলাকার অসাধু ঔষধ দোকানীরা শুরু করে অস্বাস্থ্যকর ঔষধের ব্যবসা বলে জানান এলাকাবাসী। আর এই সুযোগে জিরো থেকে হিরো হওয়ার রাস্তা বেরিয়ে আসে তাদের,আসাদ এবং কিছু অসাধু দোকানী মিলে শুরু করে ভাগ্য বদলাতে,ভাগ্য বদলানোর জন্য তারা বেচে নিয়েছিল, নামে বেনামি কিছু ঔষধ কোম্পানি এমনকি মিটফোর্ড থেকে খোলা কয়েক ধরনের ঔষধ এনে প্যাকেজিং করে সে বাজার জাত করতো বলে জানাযায়।অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যক তথ্য। এলাকাবাসী আরও জানান,কিছু অসৎ নেতাদের ছাত্র ছায়া টাকা দিয়ে তিনি এই ধরনের ঔষধের ব্যবসা করে আসছিলেন তিনি। তিনি বনে গেছে কোটি টাকার মালিক।
আর এই চাঞ্চল্যক তথ্য পেয়ে অনুসন্ধানী টিম কাজ করে যাচ্ছে।এরই ধারাবাহিকতায় খুজ নিয়ে জানাজায়,শ্রীপুর বাজার, বর্মী বাজার, গড়গড়িয়া মাষ্টারবাড়ি বাজার, বাগের বাজার, নতুন বাজার, মাওনা বাজার, এমসি বাজার, নয়নপুর বাজার, জৈনা বাজার ১ নং সি এন্ড বি বাজার, আনসার রোড, ২ নং সি এন্ড বি বাজার,সাতখামাইর বাজার, কাওরাইদ বাজার, কেওয়া বাজার সহ বিভিন্ন বাজারে পাল্লা দিয়ে ঔষধের ব্যবসা করে আসছেন অসাধু ব্যবসায়ী আসাদ।আর এই চাঞ্চল্যক তথ্য জানতে অনুসন্ধানী টিমের এক সদস্য তার পরিচয় গোপন রেখে,আসাদের কাছে জানতে চান, তিনি এই অবৈধ ব্যবসা কি ভাবে করেন? আসাদ তিনি বলেন, কোন সমস্যা নেই গাজীপুর জেলার সিভিল সার্জন আমার আত্মীয় এবং এলাকার লোক,আর শ্রীপুর উপজেলার সিভিল সার্জন আমার মামা ডিসি সাহেবের বন্ধু উনার সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক এই জন্য কোন সমস্যা নেই ব্যবসা করতে, এই কথা বলে কাজের ব্যস্ততা দেখিয়ে চলে যান তিনি।
অনুসন্ধানী টিম এলাকাবাসীর একজন সচেতন নাগরিক এর কাছে কিছু তথ্য জানতে চাইলে,এক প্রশ্নের জবাবে সচেতন নাগরিক অনুসন্ধানী টিম কে প্রশ্ন করে বলেন ? স্কয়ার কোম্পানির একটা মাল্টিভিটামিন পট যেমন,১) (ফিল ওয়েল গোল্ড) স্কয়ার কোম্পানি দোকানে বিক্রি করে ২৫০ টাকা, আর ফিল ওয়েল গোল্ড এর গায়ে কোম্পানির মূল্য দেয়া আছে ২৮০ টাকা,আর ঔষধ দোকানী যদি ২৮০ টাকা বিক্রি করে তাহলে দোকানীর লাভ হচ্ছে ৩০ টাকা। আর আসাদের দোকানের মাল্টিভিটামিন রুচিক্যাপ নামের পট বিক্রি করছে কোম্পানি আসাদের কাছে প্রায় ৩০ টাকা করে, আর আসাদ মাল্টিভিটামিন রুচিক্যাপ পট দোকানীদের কাছে পাইকারি বিক্রি করছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা করে, আর দোকানী সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করছে ৩৫০ টাকা,রুচিক্যাপ এর গায়ের মূল্য দেওয়া আছে ৩৫০ টাকা, তাহলে দোকানীর লাভ হচ্ছে ৩২০ টাকা। তাহলে রুচিক্যাপ নামক কোম্পানি মাল্টিভিটামিন পট বিক্রি করে লাভ করলো ৩২০ টাকা, আর স্কয়ার কোম্পানির মাল্টিভিটামিন ফিল ওয়েল গোল্ড বিক্রি করে লাভ করলো ৩০ টাকা। ২) স্কয়ার কোম্পানির ক্যালসিয়াম (ক্যালবো- ডি) পট এর কোম্পানির পটের গায়ের মূল্য ২১০ টাকা,কোম্পানির দোকানী দের কাছে বিক্রি করে ২৯০ টাকা, দোকানী বিক্রি করে ২১০ টাকা, তাহলে দোকানীর লাভ হচ্ছে ২০ টাকা। আর বায়োজেন ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানির ক্যালসিয়াম (জেনক্যাল ডি) নামক পট কোম্পানি আসাদের কাছে বিক্রি করে প্রায় ৩০ টাকা,আর আসাদ দোকানীদের কাছে পাইকারি বিক্রি করছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা, আর দোকানী সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করছে ২১০ টাকা,তাহলে দোকানীর লাভ হচ্ছে ১৮০ টাকা। তাহলে প্রশ্ন হলো প্রতি পটে স্কয়ার কোম্পানির ঔষধ বিক্রি করে কতো টাকা লাভ করলো?আর বায়োজেন ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানির ঔষধ বিক্রি করে কতো টাকা লাভ করলো? তাহলে নামে বেনামি কোম্পানি গুলি কি দিয়ে এইসব ঔষধ তৈরি করেছে এবং মানুষের রোগ নিরাময়ের কতোটুকু উপকারে আসবে? এই বিষয় নিয়ে কিছু সচেতন নাগরিকদের মনে গুরুপাক খাচ্ছে। এই রকম নামে বেনামি অনেক ঔষধ কোম্পানি বা ঔষধ রয়েছে, যেমন... ১) আমলকী প্লাস সিরাপ,আমটন সিরাপ,রফেক্স সিরাপ,আমলা সিরাপ,পিউটন সিরাপ,পিউভিট সিরাপ,সেব- এস সিরাপ, কালোজাম সিরাপ,অরেঞ্জী সিরাপ,পুদিনা সিরাপ,এমিটন প্লাস সিরাপ,রুচিনীড সিরাপ,হেলপিড টেবলেট, রুচিক্যাপ টেবলেট,রুচি টেবলেট, দামাসিন টেবলেট, রুচিনীট টেবলেট, ক্যালসিয়াম টেবলেট, জেনক্যাল - ডি,৩)গ্যাস্টিকের ঔষধ ওমিপ্রাজল, সেকো,সেকটিল,সিটো,রেনিটিডিন, এবং সেক্স পাওয়ারের বিভিন্ন টেবলেট ও সিরাপ যেমন, সেনারগা টেবলেট, মিল হাম নিসাত ক্যাপসুল,মুনিস ক্যাপসুল,জিন সিন সিরাপ, ও কমদামের কনডম সহ বিভিন্ন নামের ঔষধ বিক্রি করছে বলে জানান বেশ কয়েকজন সচেতন নাগরিক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন সচেতন নাগরিক জানান- এই অসাধু ব্যবাসায়ী আসাদ দীর্ঘদিন যাবত ঢাকা ময়মনসিংহ হাইওয়ে সড়কের পাশে আসপাডা নামক স্থানে একটি বাড়ির তিন চার টি রুম ভাড়া নিয়ে বাজারের ঔষধ ব্যবসায়ীহীদের সাথে একজোট হয়ে দীর্ঘদিন ধরে জনগণের সাথে এমন প্রতারণা করে আসছে।তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ নেই।নেই কোনো প্রশাসনিক ও জনপ্রতিনিধিদের নজরদারি।এতে করে একদিকে যেমন অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ক্রেতা অন্য দিকে নিম্ন মানের ভেজাল ও ভুলভাল ঔষধ খেয়ে রীতিমতো নানাবিধি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পরছে জনসাধারণ মানুষ।সাধারণ জনগণের দাবি যথাযথ কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল ভূমিকা এবং নজর দাড়ির মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে এসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হতো,তাহলে সাধারণ মানুষ একটু স্বস্তি পেতো।স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং শ্রীপুর উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন স্থানীয় সচেতন জনগণ।
এই বিষয় নিয়ে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে এইসব ওষুধের উপকারিতা ও গুনোমান বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব ধরনের কোন ওষুধ এমবিবিএস ও অধ্যাপক ডক্টররা কখনোই প্রেকসিশনে লিখেন না অথবা কোন রোগীকে এইসব ঔষধ খাওয়ার নির্দেশনা দেননি বলে তিনি জানান। তিনি আরও বলেন,এই সব ধরনের ঔষধ সেবন করলে বা ব্যাবহার করলে ক্যান্সার অথবা কিডনি রোগে আক্রান্ত এবং হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে জানান তিনি। (বিস্তারিত আসছে ২ য় পর্বে)